হাকিকুল ইসলাম খোকন: বাংলাদেশের প্রগতিশীল আন্দোলনের কিংবদন্তি রাজনীতিবিদ অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ 23 আগস্ট শুক্রবার ৯৭ বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের একমাত্র জীবিত সদস্য ছিলেন তিনি। তাজউদ্দীন আহমদকে আহ্বায়ক করে গঠিত ছয় সদস্যের মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ছিলেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান সংগঠক হিসেবে একাত্তরে ন্যাপ ও কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীদের নিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে বিশেষ গেরিলা বাহিনী গড়ে তোলায় নেতৃত্ব দেন মোজাফফর আহমদ। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বজনমত গঠনেও ভূমিকা পালন করেন মোজাফফর আহমদ।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোজাফফর আহমদ
এই আন্দোলন সংগঠনে ভূমিকা রাখেন। ১৯৫৪ সালে চাকরি ছেড়ে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেন তিনি। ওই বছর সাধারণ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হয়ে কুমিল্লার দেবীদ্বার থেকে জয়ী হন। অধ্যাপক মোজাফফর আহমদই প্রথম ১৯৫৭ সালের ৩ এপ্রিল পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদে পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসনের প্রস্তাব তোলেন। এরপর ছয় দফাসহ প্রতিটি আন্দোলনে ভূমিকা রাখেন তিনি। বাংলাদেশে সমাজতন্ত্রের আন্দোলন এবং প্রগতিশীল রাজনীতিতে তার অবদান অনেক। তিনি অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে আপসহীন ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মন্ত্রিত্ব নিতে অস্বীকার করা মোজাফফর আহমদ; ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারও তিনি নেননি। রাজনীতিতে কীভাবে আত্মোৎসর্গ করতে হয়, কীভাবে সততার দৃষ্টান্ত রাখতে হয়, লোভ-লালসা পরিহার করতে হয়, অনন্তকাল তার অনুপ্রেরণা জোগাবেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ। বাংলাদেশের রাজনীতিতে একজন কিংবদন্তি ছিলেন তিনি।
বাপসনিউজ’র পক্ষ থেকে এই মহান নেতার মৃত্যুতে আমরা গভীর শোক ও পরিবারের সদস্যদের ও তাঁর সংগঠনের নেতা, কর্মী এবং সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন আমেরিকা থেকে বাপসনিউজ এডিটর সিনিয়র সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন, সাংবাদিক এম এ সালাম, সাংবাদিক হাসানুর রহমান, সাংবাদিক এবিএম সালেহউদ্দিন, সাংবাদিক মো: নাসির, সাংবাদিক হেলাল মাহমুদ, সাংবাদিক সরদার আল মামুন, সাংবাদিক পংকজ রাত, সাংবাদিক আয়েশা আক্তার রুবি, সাংবাদিক ওসমান গনি, সাংবাদিক সুহাস বডুয়া প্রমুখ।